আসুন জানি একটি ভালো সিভি লিখবার নিয়ম কানুন

আজকে আমরা যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো সেটি হচ্ছে- একটি ভালো সিভি লিখবার নিয়ম কানুন। আজকের আলোচনার পূর্বে জানি সিভি বিষয়টা আসলে কি এবং এর প্রয়োজনীয়তাই বা কি?

সিভি বা বায়োডাটা হচ্ছে এমন একটা বিষয় যা নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে পারে। আর এই সিভি বা বায়োডাটা বেশ কয়েক ধরনের হতে পারে, যেমন চাকুরীরর জন্য সিভি, কোন কিছু প্রাপ্তির জন্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিভির প্রয়োজন হতে পারে এবং বিবাহ বিষয়ক প্রয়োজনেও আমাদের সিভি তৈরী করবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

তবে আজকে আমরা যে সিভির বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো সেটি চাকুরীর প্রয়োজনে যে সিভি লিখবার প্রয়োজন সে বিষয়ে।

একটি ভালো সিভি লিখবার প্রয়োজনীয় ধাপ নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

১ম ধাপঃ সিভি লিখতে হবে আত্মপ্রত্যয়ী এবং ইতিবাচক শব্দে।

২য় ধাপঃ সিভিতে আপনার প্রাপ্তির সার সংক্ষেপ রাখতে হবে। আপনার জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক এবং কর্ম জীবনের সকল প্রাপ্তি গুলো এখানে উল্লেখ করুন।

৩য় ধাপঃ আপনি যে চাকুরীর জন্য আবেদন করছেন সে চাকুরী সম্পৃক্ত অভিজ্ঞতা সংযোগ করুন।

৪র্থ ধাপঃ আবেদনকৃত পদ সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে আপনার সকল কর্ম দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং পড়াশোনা আছে সেগুলোর উপরে গুরুত্ব দিন যাতে চাকুরীদাতা আপনার সম্পর্কে একটি ভালো এবং সঠিক ধারনা পায়।

৫ম ধাপঃ সিভি যেহেতু চাকুরী সংশ্লিষ্ঠ তাই সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ভাবে সিভিতে উল্লেখ করা, অহেতুক সিভির কলেবরে বৃদ্ধি করবেন না।

৬ষ্ঠ ধাপঃ স্যাটেলাইটের যুগে কম্পিউটার এবং ভাষা দক্ষতার সকল দক্ষতার একটি সুষ্ঠ তালিকা তৈরী এবং সেটা সিভিতে অবশ্যই সংযুক্ত করা।

৭ম ধাপঃ একটি ভালো সিভির সবচেয়ে বড় যে বৈশিষ্ঠ্য তা হলো সিভিটি সংক্ষিপ্ত, লিখবার ক্ষেত্রে বানান এবং ব্যাকরনগত কোন ভূল না থাকে। এবং সিভির গঠন প্রনালী যেন দৃষ্টি নন্দন হয়।

৮ম ধাপঃ অনলাইনে সিভি সাবমিটের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবো যে আমাদের সিভি এর ক্যাটাগরী বা কী-ওয়ার্ড যেন সঠিক ভাবে লিখা হয়।

৯ম ধাপঃ এক্সটা কারিকুলাম একটিভিটিজ সম্পর্কে একটু সচেতন হন, আপনি যদি কোন বিষয়ে ভালো হন তাহলেই এই বিষয়টার উল্লেখ করুন। অযথা বিষয় লিখবেন না।

১০ম ধাপঃ সিভির সমাপনীতে নিজেকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করুন। যা আপনাকে অন্যেদের থেকে আলাদা করে তুলেবে।

মনে রাখবেন একটি সিভি আপনাকে চাকুরীদাতার কাছে আপনাকে উপস্থাপন করবে আর তাই সিভি লিখবার সময় খেয়াল রাখবেন যেন কোন ভাবেই যেন আপনার সিভিতে কোন প্রকার অপ্রাসঙ্গিক বিষয় চলে না আসে যা আপনার ব্যাক্তিত্বকে হাল্কা করে দেয়।

এবার জানি একটি ভালো সিভি লিখবার সময় আমরা কি কি বিষয় এড়িয়ে যাবোঃ

১ম বিষয়ঃ সিভিতে কোন প্রকার ভুল তথ্য সংযেজন করবেন না। এটা কোন ভাবে আপনার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।

২য় বিষয়ঃ বিভি কখনো মাল্টিকালার বা বিভিন্ন ধরনের ফন্ট ব্যবহার না করা।

৩য় বিষয়ঃ সিভিতে স্বল্প কালীন কোন প্রশিক্ষনের বিষয় উল্লেখ করে সিভির কলেবরে বৃদ্ধি না করা।

৪র্থ বিষয়ঃ অতি গোপনীয় বিষয় সিভিতে উল্লেখ না করা। যদি সিভিতে উল্লেখ করবার কথা উল্লেখ থাকে সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।

৫ম বিষয়ঃ একই প্রতিষ্ঠানে যদি একাধীক পদে চাকুরীর জন্য আবেদন করা হয়ে থাকে তাহলে সিভির গঠন ভিন্ন ভিন্ন না করা। একই রকমের সিভি’র কাঠামো থাকা বাঞ্ছনীয়। সিভির কাঠামো বা সিভিতে সংযোজিত ছবি ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার নিজেকে অস্থির প্রকৃতির হিসেবে উপস্থাপন করে।

৬ষ্ঠ বিষয়ঃ সিভিতে ভুলেও একই বিষয় একাধীকবার ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে চাকুরীদাতার অহেতুক বিরক্তের কারন হয়ে দাড়াবে।

৭ম বিষয়ঃ অনেক গুরুত্ব পূর্ন একটি বিষয় রেফারেন্স, চাকুরী আবেদনের ক্ষেত্রে উল্লেখ না থাকলে রেফারেন্স দেয়া থেকে বিরত থাকা। আর চাইলে রেফারেন্স এ যেন নিজেকে ক্ষমতাবান জাহির করবার মানষিকতা যেন প্রকাশ না পায় সে দিকটা খেয়াল রাখা।

৮ম বিষয়ঃ সিভিতে গৎ বাধা বিষয় এড়িয়ে যাওয়া।

আমাদের এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুসরন করে আপনি চাইলেই একটা সুন্দর সিভি তৈরী করতে পারবেন- যা আপনাকে চাকুরীর বাজারে নিজেকে অন্যেদের থেকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করবে।

আর আমরা জানি যেকোন বিষয় ভিন্ন ভাবে উপস্থাপিত হলে সকলের দৃষ্টি আকৃষ্ঠ হয় তো আমরা যদি কিছু নিয়ম অনুসরন করে চাকুরীদাতা’র দৃষ্টি আকর্শন করতে পারি কেন তাহলে সে সুযোগ হেলায় হারাবো?

আজকের আলোচনাটি চাকুরীপ্রার্থীদের সামান্য উপকারে আসলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *