ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ সফল হবার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু টিপ্স

ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ সফল হতে কে না চায়। আসলে যেকোন মার্কেটপ্লেসে সফল হতে হলে আমাদের কিছুৃ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হয় আর তাই আজকে আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা বুঝে কাজ করলে আমরা ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ সফল হতে পারবো। আর ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ কিভাবে সফল হওয়া যায় সে বিষয় গুলোই আজকে আমাদের আলোচনার মূল বিষয় আসুন আমরা বিস্তারিত জেনে নেই ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ সফল হবার জন্য করনীয় বিষয়।

 মনে রাখতে হবে যেকোন বিজনেস এ রেপুটেশনই সব। ভালো রেপুটেশন না থাকলে কখোনও কোন ব্যবসায় সফল হওয়া যায় না। আগের কাজের ভালো রেপুটেশন পরের কাজ পেতে সহায়তা করে। আপওয়ার্ক বা যেকোন মার্কেট প্লেসের ব্যাপারটাও একই। এখানে যেহেতু আমরা জানতে পারি না কে কেমন কাজ করে কার কাজের কোয়ালিটি কেমন। অনলাইনে এসব বিষয় জানবার একমাত্র উপায় হচ্ছে আগের কাজে রেপুটেশন বা ফিডব্যাক, যার কাজের ফিডব্যাক যত ভালো ক্লাইন্টএর কমেন্ট যত ভালো হবে তাকেই ভালো কর্মী মানা হয় এখানে। আর তাই এখানে রেপুটেশন যার যত ভালো, পরের কাজ পাবারও সম্ভাবনা তার তত বেড়ে যাবে। মোট কথা একজন ওয়ার্কারের রেপুটেশন দেখেই কোন ক্লাইন্ট তার কর্মী নির্ধারন করে থাকে।

 আর তাই আমাদের কাজের ফিডব্যাক এর কথা মাথায় রেখেই কাজ পাবার চেষ্টা করতে হবে।

এবার আমরা ধারাবাতিক ভাবে জানবো কিভাবে আমরা আমাদের কাজ সিলেক্ট করবো, কিভাবে আমরা নুতন একটা কাজ শুরু করবো কাজ চলার সময় কিভাবে থাকবো এবং কাজ শেষে আমাদের কি করনীয়।

১। নুতন একটি প্রোজেক্ট আগে যা দেখবোঃ ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ আমরা নুতন যে কাজটি নিতে চাচ্ছি সে কাজটি সম্পর্কে আমাদের ধারনা কেমন? এবং কাজটি করতে আমারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করি কি না। যে কাজ ভালো লাগে বা স্বাচ্ছন্দ বোধ করি সে কাজটি আমরা খুব সহজে এবং দ্রুতই করতে পারি।
এটা এমন না যে আমরা সব কাজেই বিড করবো। যে কাজে আমরা খুব ভালো পারি স্বাচ্ছন্দ বোধ করবো সে কাজেই আমরা বিড করবো। সব কাজেই বিড না করে আমাদের একটু সিলেক্টিভ হতে হবে আমাদের নিজেদের ভালো পারফরমেন্স এবং সময় মতো শেষ করবার জন্যই। এখানে আরো কিছু গুরুত্ত্বপূর্ন টিপ্স শেয়ার করছি যা আমাদের নুতন প্রজেক্ট সিলেক্ট করতে সহায়তা করবে।

ক) জবটি ঠিক মতোন বোঝাঃ কোন জব পোষ্ট এ প্রোপজাল সাবমিট করবার আগে অবশ্যই সেই জবপোষ্টটি ভালো ভাবে পড়ে দেখা উচিৎ। এবং দেখা উচিৎ যে পোষ্ট করা জবটির সাথে আমার নিজের জানা এবং কাজের অভিজ্ঞতার সাথে মেলে কি না। এটা নিশ্চিত হলে তবেই আমরা কোন জবপোষ্ট এ আমারা প্রোপজাল সাবমিট করবো। ভালো ভাবে আমাদের অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতার সাথে ম্যাচ না করলে সে কাজ থেকে বিরত থাকাই ভালো।

খ) নিশ্চিত হোন আপনিই এই কাজটির জন্য সঠিক ব্যাক্তি কি নাঃ যেকোন কাজিএ প্রোপজাল সাবমিট করবার আগে জবপোষ্টটি পড়ে একটু নিশ্চিত হোন, যে কাজটি আপনি নিতে চাচ্ছেন সে কাজটির জন্য আপনার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা ও যথেষ্ট সময় আছে কি না। যদি না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে সে কাজটিতে প্রোপজাল সাবমিট না করাই ভালো।

গ) আপনি কাজটির জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে পারবেন কি নাঃ কোন কাজে বিড করবার আগে একবার নিশ্চিত হয়ে নিন যে, আপনার কাজটি সম্পন্ন করবার জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে কি না। নুতন কাজটি নেবার আগে নিশ্চিত হোন যে কাজটির শেষ করবার সময় যাতে আপনি আপনার কাজটি সঠিক সময়ের মাঝে বুঝায় দিতে পারেন। এতে ক্লাইন্ট আপনাকে ভালো ফিডব্যাক দিবে এবং ভবিষ্যতে নুতন কোন কাজ থাকলে আপনার সাথে যোগা যোগ করবে।

ঘ) আপনার সময় ঠিক করুনঃ আপনার কাজের জন্য সময় ঠিক করুন এক্ষেত্রে বাস্তব সম্মত সময় নির্ধারন করুন। কখনো এমন সময় নিবেন না যাতে আপনার কাজটি সম্পন্ন করতে অসুবিধা হয়। একটি মানুষের পক্ষে একটানা ১২ বা ১৪ ঘন্টা কাজ করা প্রায় অসম্ভব। তাই ক্লাইন্ট এর সাথে আলোচনার সময় এমন একটি সময় নির্ধারন করুন যে আপনি সে সময় অবস্যই কাজ করতে পারবেন। এতে আপনার ও আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে সু-সম্পর্ক বজায় থাকবে। এবং একই ক্লাইন্ট এর আরো অনেক কাজ পাবার সুযোগ তৈরী হবে। যা প্রকারন্তরে আপনার জন্যই লাভ জনক।

ঙ) আপনার ক্লাইন্ট কে বুঝুনঃ ইন্টারভিউ এর সময় ভালো ভাবে বুঝবার চেষ্টা করুন যে, আপনার ক্লাইন্ট এর কি প্রয়োজন। যদি আপনি কাজটি সম্পর্কে নিশ্চিত না হোন তাহলে আপনি সে কাজটি নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনার রেপুটেশনের জন্য ভালো।

 ২। নুতন কাজ শুরু করবার আগেঃ নুতন কাজ পাবার পর অতি মাত্রায় খুশি না হয়ে সিরিয়াস হয়ে পরুন। কারণ সঠিক সময়ে এবং ভালো ভাবে কাজটি সম্পন্ন না করতে পারলে আপনার এ খুশি দুঃখে পরিনত হবে। আর তাই নুতন প্রোজেক্টটি পাবার পর কাজে লেগে পরুন, নিজেকে নিশ্চিত করুন কাজটির একটি সুন্দর শুরুর জন্য। আর এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা। নুতন প্রজেক্টটি পাবার পর কিভাবে সফল ভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবেন সে বিষয়ে কিছু গুরুত্ত্বপূর্ন টিপ্স নিচে আলোচনা করছি, যা আপনাকে নুতন প্রজেক্টটি সফল ভাবে সম্পন্ন করতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করবে।

 ক) কাজের শেষ সময় নির্ধারন করুনঃ কাজের শুরুতেই আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে কথা বলে কাজের শেষ সময় নির্ধারন করে নিন। এবং কাজটিকে সময় অনুযায়ী ভাগ করে নিন। এবং অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে কাজের শেষ সময় আপনি আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এর ম্যাসেজের মাধ্যমে নিশ্চিত করুন যাতে আপনি এটাকে প্রমান হিসেবে দেখাতে পারেন। কারন অনেকেই সময় নিয়ে সমস্যা করে। আর তাই ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এর ম্যাসেজের মাধ্যমে  কাজের শেষ সময় নিশ্চিত করলে সেটাকে প্রমান হিসেবে দেখাতে পারবেন। ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলো তাদের নিজস্ব ম্যাসেজ ছাড়া অন্য কোন প্রমান গ্রহন করে না। আর তাই নুতন কাজ শুরু করবার আগে অবশ্যই ক্লাইন্ট এর থেকে শেষ সময় নিশ্চিত হয়ে নিবেন।

খ) বাস্তব বাদী হওয়াঃ ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ বাস্তববাদী হওয়া খুবই জরুরী। যদি আপনার কখনও মনে হয় আপনি কাজটি সঠিক সময়ে সম্পন্ন করতে পারছেন না তাহলে কোন প্রকার ইতস্তঃ না করে সরাসরি আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে কথা বলুন। এতে আপনার ক্লাইন্ট আপনার কথা অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারবেন। এতে আর যাই হোক ক্লাইন্ট আপনার প্রতি বিরোক্তবোধ করবেনা না।

গ) ঠিক করুন আপনি কিভাবে আপনার ক্লাইন্টের সাথে কাজ করবেনঃ কাজ শুরু করবার সময় মিটিং এ আপনি আপনার ক্লাইন্টকে জানান আপনি কিভাবে তার কাজটি সম্পন্ন করবেন? এবং প্রতি দিন আপনার কাজের আপডেট আপনার ক্লাইন্টকে জানান। যেকোন পরিবর্তন করবার প্রয়েঅজন হলে সেটা আগে আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে শেয়ার করুন। সব সময় আপনি আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখবেন আপনার যোগাযোগের মাধ্যম যেন হয় মার্কেটপ্লেস এর মেসেজ অপশনের মাঝে।

 ঘ) নিশ্চিত করুন আপনার কাজের জন্য কি প্রয়োজন আছেঃ কাজ শুরু করবার আগে একটি প্রশ্ন লিস্ট তৈরী করুন যা আপনার কাজের অগ্রগতি নিশ্চিত করবে। আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে আলোচনা সম্পন্ন করবার পর দেখুন আপনার কাজের জন্য এমন কোনকিছু প্রয়োজন আছে কি না, যেমন কোথাও এক্সেস এর অনুমোতি প্রয়োজন আছে কি না, কোন পাসওয়ার্ড এর প্রোয়োজন আছে কি না, বা কোন প্রকার কন্টাক্ট এর তথ্য আপনার লাগবে কি না।  আপনার যা তথ্য লাগবে সে গুলো আপনার ক্লাইন্ট এর থেকে একবারে সংগ্রহ করে কাজ শুরু করে দিন। যাতে আপনার কাজের সময় কোন তথ্যের জন্য আপনার কাজ থেমে না থাকে।

৩। কাজ চলা কালীন সময়ঃ সফল প্রফেশনাল সম্পর্কের জন্য সম্মান, যোগাযোগ ও সংবেদনশীলতা একটি গুরুত্ত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে। তাই আমরা কাজ চলাকালীন সময় একে অপরকে সম্মানবোধ বজায় রাখতে সচেষ্ঠ হবো, প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রক্ষা করবো এবং একে অন্যের প্রতি সংবেদনশীল হবো। যা আমাদের প্রফেশনাল সম্পর্ক  বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়তা দিবে। এখানে আমরা বিষয়গুলো নিয়ে নিম্নে আলোচনা করবো।

 ক) সংবেদনশীল হোনঃ আপনার কাজের প্রতি সংবেদনশীল হোন, ক্লায়েন্ট যখনই আপনাকে কোন মেসেজ দিলে আপনি যতশিগ্রি পারে তাতে সাড়া দিন। এতে আপনার প্রতি আপনার ক্লায়েন্ট এর আস্থা জন্মাবে এবং আপনার প্রতি ভালো ধারনা জন্ম নিবে।

খ) কাজের সময়ের প্রতি সম্মান দেখাবোঃ নির্ধারিত সময়ের মাঝে আমরা কাজ সম্পন্ন করবার ব্যাপারে একমত থাকবো এবং সঠিক সময়ের মাঝে কাজটি সম্পন্ন করে দিবো। যদি কোন বিশেষ কারণ বশতঃ কাজটি সময় মতো সম্পন্নকরতে না পারেন তাহলে তাহলে অনতি বিলম্বে আপনার ক্লাইন্টকে তা অবগত করুন এবং আপনি কাজটি সম্পন্ন করতে আর কত সময় লাগবে সেটি তাদেরকে জানা।

গ) আপনার ক্লায়েন্টেকে প্রশ্ন করুনঃ আপনার কাজের ব্যাপারে কোন তথ্য জানবার থাকলে আপনি আপনার ক্লায়েন্টকে প্রশ্ন করুন। এবং আপনার কাজ সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। আপনার কাজ সম্পর্কে যতক্ষন পরিস্কার কোন ধারনা না হচ্ছে ততক্ষন প্রয়োজনীয় প্রশ্নের মাধ্যেমে আপনার কাজ সম্পর্কে একটি পরিস্কার ধারনা তৈরী করুন। এবং কাজ শুরু করেদিন। খেয়াল রাখবেন অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে আপনার ক্লায়েন্টকে বিরোক্ত করবেন না।

ঘ) ফীডব্যাক এর জন্য অনুরোধ করুনঃ আপনার কাজটি সঠিক ভাবে সম্পন্ন করবার পর ফীডব্যাকের জন্য অনুরোধ করুন। কারন আপনার কাজের যত ভালো ফীডব্যাক থাকবে আপনি ভালো ওয়ার্কার হিসেবে পরিচিত হবেন নুতন ক্লাইন্টদের কাছে। কারন অনলাইন জগতে একমাত্র আপনার কাজের ভালো স্বীকৃতি আপনাকে নুতন কাজ পেতে সহায়তা দিবে। আর তাই আপনি যত ভালো কাজ করবেন আপনার ক্লাইন্টও আপনাকে তত ভালো ফীডব্যাক দিবে। তাই ভালো ভাবে আপনার কাজ সম্পন্ন করুন এবং আপনার ক্লাইন্ট এর সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন।

 ৪। কাজ শেষে আপনার করনীয়ঃ ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস এ

ক) ক্লায়েন্ট এর সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রাখুনঃ

খ) ক্লায়েন্ট কে আপনার চুক্তি সম্পন্ন করবার অনুরোধ করুনঃ

উপসংহারঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *